গাজায় যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর রাখার ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় পরিচালিত এই হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হয়েছিলেন ১০৪ জন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েল দাবি করেছে, হামলাস্থলে অস্ত্র মজুত ছিল যা তাদের সেনাদের জন্য “তাৎক্ষণিক হুমকি” তৈরি করেছিল। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ধারাবাহিক হামলায় নাজুক যুদ্ধবিরতি আবারও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
গত মঙ্গলবার রাফাহ এলাকায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‘প্রতিশোধমূলক জোরালো হামলার’ নির্দেশ দেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই অভিযানে শতাধিক মানুষ নিহত হয়। ইসরায়েল দাবি করেছে, সেখানে ‘ডজনখানেক হামাস যোদ্ধা’ নিহত হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ইসরায়েল আবারও যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার ঘোষণা দিলেও সন্ধ্যায় ফের বিমান হামলা চালায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “সর্বশেষ হামলার পরও অস্ত্রবিরতি ঝুঁকির মুখে নেই।” অপরদিকে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার হামলায় হতাশা প্রকাশ করলেও জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে আশাবাদী।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গাজার বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁর মুখপাত্র স্টিফান ডুজারিক বলেন, “এই হামলায় বহু শিশু নিহত হয়েছে, যা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক বলেন, “এত বিপুল সংখ্যক হতাহতের খবর ভয়াবহ।” তিনি সব পক্ষকে শান্তি প্রচেষ্টা ধরে রাখার আহ্বান জানান। একই আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, রাফাহে যে ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে, সেটিতে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে সাম্প্রতিক হামলার কারণে এক নিহত ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে সংগঠনটি।
অন্যদিকে ইসরায়েল রেডক্রসের প্রতিনিধিদের ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। হামাস এ সিদ্ধান্তকে বন্দিদের অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তারা বলেছে, “এটি ইসরায়েলের ধারাবাহিক নির্যাতন ও অবরোধনীতিরই অংশ।”


