বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। তিনি মনে করেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল শুরু হয়েছে।
গতকাল রবিবার রাতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “যথাসময়ে নির্বাচন নিয়ে জনমনে প্রশ্ন বাড়ছে। পতিত পলাতক স্বৈরাচারের সময় জনগণের নির্বাচনের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিল না। এখনো কেউ কেউ সংশয়ে রয়েছেন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে কি না—এমন অনিশ্চয়তা গণতন্ত্র উত্তরণের পথে সংকট তৈরি করতে পারে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এখনো বিএনপির বিজয় ঠেকাতে নানা কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”
ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সচেতন থাকার আহবান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য বজায় রাখতে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার একের পর এক নতুন শর্ত আরোপ করে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপন্ন করে তুলছে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “কৌশল ও অপকৌশলের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক দলগুলো শেষ পর্যন্ত অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হতে পারে। তাই এই সময় সব রাজনৈতিক দলেরই সতর্ক থাকা প্রয়োজন।”
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “শিগগিরই বিএনপির দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। মনোনয়ন যিনি পাবেন, তাঁর বিজয়ের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হলে প্রতিপক্ষ তার সুযোগ নিতে পারে।”
তিনি বলেন, “ধানের শীষ জিতলে দেশ ও গণতন্ত্র জিতবে। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান ও মাদার অব ডেমোক্রেসি খালেদা জিয়ার অবদান নিয়ে কেউ যেন অমর্যাদা না করেন। নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে থাকবেন—এই আহবান জানাচ্ছি।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে তারেক রহমান বলেন, “প্রবাস থেকে প্রথমবার ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রবাসী ভোট প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে।”
নারী নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নারীদের নিরাপত্তাহীনতা সমাজের জন্য উদ্বেগজনক। গত আগস্টে ৯৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন—এটি সভ্য সমাজের জন্য কলঙ্ক। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের উচিত নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক জাহিদ হোসেনসহ অন্যান্য নেতা।


