ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের নতুন বাজার ও পৌরসভা চত্বরে এ সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে নতুন বাজার এলাকায় বিজেপি কার্যালয় থেকে দলটির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি সদর রোড ও চকবাজার ঘুরে কার্যালয়ে ফিরে সমাবেশ করে। অপরদিকে, পূর্ব ঘোষণামাফিক বিএনপি দুপুর সাড়ে ১২টায় মহাজনপট্টি দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি সদর রোড ও বাংলাস্কুল মোড় ঘুরে নতুন বাজারে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় উভয় পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘটনায় পুলিশ ও সংবাদকর্মীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় বিজেপি কার্যালয়ের আসবাবপত্র এবং রাস্তার পাশে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেল। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের পর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভোলা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম বলেন, “নির্বাচন বিলম্বিত ও বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আমাদের মিছিল ছিল। প্রশাসনের দেওয়া সময় অনুযায়ী আমরা মিছিল শুরু করি। বিজেপির মিছিল আগেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তারা তখনও অবস্থান নেয়। আমরা ফিরে যেতে বললেও তারা ঢিল ছোড়ে, সেখান থেকেই সংঘর্ষ শুরু হয়।”
বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের অন্তত ১৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন।”
অন্যদিকে, বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, “বিজেপির অঙ্গসংগঠনের বৈধ সভা চলাকালে বিএনপি মিছিল নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের ৩৬ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয়জনকে বরিশালে এবং ৩০ জনকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ এনে বলেন, “আমরা কোনো হামলা করিনি, বরং হামলার শিকার হয়েছি।”
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদৎ মো. হাচনাইন পারভেজ জানান, বিএনপির মিছিল নির্ধারিত রুট না মেনে নতুন বাজারে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণে আনে।”
ওসি আরও জানান, যারা আইন অমান্য করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


