নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ টানা ১০ দিনের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত দেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে করা রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে যুক্ত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
গত ২১ অক্টোবর এই আপিলের শুনানি শুরু হয়। এর আগে ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এই মামলার আপিলকারীদের মধ্যে রয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং আরও কয়েকজন নাগরিক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।
তবে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ওই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। এর পর একই বছরের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পুনরায় এ ব্যবস্থার বৈধতা প্রশ্নে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। আদালত এখন এ ঐতিহাসিক মামলার রায় ঘোষণা করবে ২০ নভেম্বর।


