আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের প্রচারে ড্রোন, পোস্টার এবং বিদেশে প্রচারণা নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার, বিলবোর্ডের সংখ্যা, এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) অপব্যবহারসহ নানা বিষয়ে কঠোর আচরণবিধি জারি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার আচরণবিধিটি গেজেট আকারে প্রকাশ করে ইসি। এতে বলা হয়, কোনো প্রার্থী বা দল নির্বাচনী প্রচারণায় ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা অনুরূপ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না। একজন প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন না; প্রতিটি বিলবোর্ডের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১৬ ফুট ও প্রস্থ ৯ ফুটের বেশি হবে না।
প্রথমবারের মতো নির্বাচনী পোস্টার ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব প্রচারে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে, পলিথিন, পিভিসি বা রেক্সিনজাত উপকরণ ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার ও ফেস্টুনে আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ থাকলেও ডিজিটাল বিলবোর্ডে সীমিত আলোর ব্যবহার অনুমোদিত।
আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনো দল বা প্রার্থী বিদেশে জনসভা, সমাবেশ বা প্রচারণা চালাতে পারবে না। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রার্থী বা তাঁর এজেন্টকে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের নাম, আইডি ও ইমেইল ঠিকানা আগে থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাতে হবে।
ইসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর, বিদ্বেষপূর্ণ বা চরিত্রহননমূলক কনটেন্ট তৈরি ও প্রচার নির্বাচনী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতি ব্যবহার, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ও ভুয়া তথ্য প্রচারও নিষিদ্ধ।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড, দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। গুরুতর অপরাধে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও ইসিকে দেওয়া হয়েছে।
এবারের বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারে শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে রাখতে হবে। প্রার্থী ও দলকে আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তারা সব প্রার্থীকে একমঞ্চে এনে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ করে দেবেন।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুসারে ২০০৮ সালের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন বিধিমালাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন-সংক্রান্ত সব সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে।


