সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম ধাপে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। ছয়টি বিভাগের বিদ্যালয়ের জন্য মোট ১০ হাজার ২১৯টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো হলো—রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ।
সহকারী শিক্ষক পদে অনলাইনে আবেদন শুরু হবে আগামী ৮ নভেম্বর (শনিবার) এবং চলবে ২১ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।
জাতীয় বেতনস্কেল-২০১৫ অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেডভুক্ত, যেখানে বেতন সীমা ১১,০০০ থেকে ২৬,৫৯০ টাকা। আবেদন করতে প্রার্থীকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তত দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। ৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ এবং ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮ সিজিপিএ থাকতে হবে। তবে শিক্ষাজীবনের কোনো স্তরে তৃতীয় শ্রেণি বা সমমানের ফল গ্রহণযোগ্য হবে না।
৩০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রার্থীর বয়স হতে হবে ন্যূনতম ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিবাহিত নারী প্রার্থীরা তাদের স্বামী বা পিতার স্থায়ী ঠিকানার যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন। তবে তিনি যে ঠিকানা উল্লেখ করবেন, সেই উপজেলা বা শিক্ষা থানার শূন্য পদেই নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন।
ভুয়া, ত্রুটিপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ আবেদন কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই বাতিল বলে গণ্য হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভুল তথ্য প্রদান করলে আবেদনকারীকে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।
উপজেলা বা শিক্ষা থানাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের নিজ উপজেলা বা শিক্ষা থানার বিদ্যালয়েই চাকরি করতে হবে এবং বদলি ওই এলাকার মধ্যেই সীমিত থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ধূমপানসহ মাদকাসক্ত প্রার্থীদের আবেদন না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।


প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, বিজ্ঞপ্তিটি বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হবে এবং রাত ১২টার পর থেকে ডিপিইর ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া প্রায় ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পদোন্নতি দেওয়া হলে আরও ৩২ হাজার পদ শূন্য হবে।
দীর্ঘ জটিলতা কাটিয়ে গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রকাশ করা হয়। নতুন বিধিমালায় সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টি করা হলেও বিতর্কের মুখে তা বাতিল করা হয়। ২ নভেম্বর সংশোধিত বিধিমালা প্রকাশের পর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলো।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে চার বিষয়ে—বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি)।
মোট ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজিতে ২৫ নম্বর করে ৫০ নম্বর এবং গণিত, বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানে ২০ নম্বর করে ৪০ নম্বর থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় ৯০ মিনিট সময় নির্ধারিত হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষা হবে ১০ নম্বরের, যেখানে পাস নম্বর ৫। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর নির্ধারিত হয়েছে মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ৪৫।


