চব্বিশ সালের জুলাই–আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে করা এ মামলার রায় সোমবার দুপুরে ঘোষণা করা হয়।
দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল–১ এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী রায়ের প্রথম অংশ পাঠ করা শুরু করেন। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আরও ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ। দুই ঘণ্টা দশ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় পাঠ শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়।
মামলায় পলাতক রয়েছেন কামাল। অন্যদিকে গত বছর গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর শাস্তির বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
সোমবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই মামুনকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এ সময় তিনি মাথা নিচু করে হাজতখানায় প্রবেশ করেন।
রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট ও সংলগ্ন এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন থাকে। আগের রাত থেকেই দোয়েল চত্বর–শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়।
গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। নয় কার্যদিবসে প্রসিকিউশন ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক এবং রাষ্ট্রের প্রধান আইনকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপিত হয়।
প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানায়। রাজসাক্ষী হওয়ায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় রাখা হয়। তাঁর আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ মামুনের খালাস প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করেন—হাসিনা ও কামালও খালাস পাবেন।


