আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ব্যারনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ তথ্য জানান। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বৈঠকে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন রোধ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, রোহিঙ্গা ইস্যু, বিমান ও সামুদ্রিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক এবং ভোটার উপস্থিতি হবে ব্যাপক। তাঁর মতে, স্বৈরশাসনের সময়ে বিকৃত নির্বাচনে ভোট দিতে না পারা কোটি তরুণ এবার প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন দলটিকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকেও বাদ দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জুলাই চার্টারকে ‘বাংলাদেশের নতুন সূচনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের জুলাই–আগস্টের গণবিদ্রোহ দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা স্পষ্ট করেছে। সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে এই চার্টার।
ব্রিটিশ মন্ত্রী চ্যাপম্যান বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদকে ঘিরে চলমান আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি ব্রিটিশ অভিবাসন ব্যবস্থার অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ জানান এবং নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বৈধ পথে আরও বেশি বাংলাদেশিকে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিতে উৎসাহিত করবে।
দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। ড. ইউনূস বলেন, শিবিরে আশ্রয় নেওয়া যুবকেরা আশাহীন হয়ে বড় হচ্ছে—রাগান্বিত ও হতাশ। তাঁদের শিক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বৈঠকে ঢাকা–লন্ডন বাণিজ্য ও সহযোগিতা সম্প্রসারণ নিয়েও কথা হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ উপকূলীয় ও সামুদ্রিক গবেষণার জন্য একটি ব্রিটিশ গবেষণা জাহাজ কিনছে। ব্রিটিশ মন্ত্রী জানান, দুই দেশের বিমান খাতের সহযোগিতা শক্তিশালী করতে এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসবেন।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোর্শেদ এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক উপস্থিত ছিলেন।


